লালমনিরহাট সদরের কুলাঘাট ইউনিয়নে রাস্তা ছাড়াই খালের উপর ব্রীজ নির্মাণ

লালমনিরহাট জেলা, সদর উপজেলার কুলাঘাট ইউনিয়নে রাস্তা ছাড়াই খালের উপর ব্রীজ নির্মাণ করা হয়েছে। ব্রীজের দুইপাশের গ্রামের মানুষ বাঁশ ঝাড়, বাঁশের বেড়া এবং রাস্তা না থাকার কারনে যাতায়াত করতে পারছেনা। স্থানীয়দের কোনও কাজে আসছে না ১৮লক্ষ ২০হাজার ৮শত ২৮টাকা ৫৭পয়সার এই ব্রীজ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, লালমনিরহাট সদর উপজেলার কুলাঘাট ইউনিয়নের পূর্ব বড়ুয়া ও ছড়ারপাড় গ্রামের সংযোগস্থলে বাঁশঝাড় ও ফসলি মাঠ। মাঝখানে রয়েছে একটি (ছড়ারপাড়) খাল। একই গ্রামের মানুষের চলাচলের রাস্তা নেই। অথচ বাঁশঝাড় ও ফসলি মাঠের মাঝখানে নির্মাণ করা হয়েছে ব্রীজটি। ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরে ১৮লক্ষ ২০হাজার ৮শত ২৮টাকা ৫৭পয়সা ব্যয়ে ব্রীজটি করা হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি)র আওতায় ২০১৯-২০২০ইং অর্থ বছরে লালমনিরহাট সদর উপজেলার কুলাঘাট ইউনিয়নের বড়ুয়া গ্রামের ছড়ারপাড় খালের উপর ১৮লক্ষ ২০হাজার ৮শত ২৮টাকা ৫৭পয়সা ব্যয়ে মাঝারি আকারের হাইড্রোলিক স্ট্রাকচার (ফুটব্রীজ) নির্মাণ করা হয়। নির্মাণ ব্যয় পরিশোধ করে রংপুর অঞ্চলে ভূ-উপরিস্থ পানি সংরক্ষণের মাধ্যমে ক্ষুদ্রসেচ উন্নয়ন ও সেচ দক্ষতা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্প বিএডিসি রংপুর। ২০২০ সালের ২৮ শে জানুয়ারি বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) কুলাঘাট খালের উপর মাঝারী আকারের হাইড্রোলিক স্ট্রাকচার (ফুটব্রীজ) নির্মাণ কাজের শুভ উদ্বোধন করেন লালমনিরহাট সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ কামরুজ্জামান সুজন। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ছিলেন ঢাকা ফার্মগেট ১০৪ গ্রীণ রোডস্থ মেসার্স নজরুল এন্টারপ্রাইজ। বিএডিসির লোকজন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করলেও এখন পর্যন্ত সড়ক নির্মাণে কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। সেই থেকে যোগাযোগ বিড়ম্বনায় ওই এলাকার কয়েক হাজার মানুষ।
আরও জানা যায়, ব্রীজটি সোজা পূর্ব-পশ্চিম দিক বরাবর লম্বা। ব্রীজটির পশ্চিমে পূর্ব বড়ুয়া ও মোজাম্মেল হকের বাড়ি রয়েছে। সেখানে ১হাজার ২শত মানুষের বসবাস রয়েছে। ব্রীজটির পূর্বে ছড়ারপাড় ও মাহিদুল ইসলামের বাড়ি রয়েছে। সেখানে ৬শত মানুষের বসবাস রয়েছে। পাশেই রয়েছে একটি ঈদগাহ মাঠ সেখানে দুই এলাকার মানুষ ঈদের নামাজ আদায় করে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বলেন, ব্রীজটির মুখ বরাবর জমির মালিক বেলাল হোসেনের পুত্র আঃ ছালাম। ব্রীজটির সামনের জমির যে মালিক তিনি রাস্তার জন্য জমি দিবেনা। তাই তিনি গর্ত করে রেখেছেন। সেই সঙ্গে তিনি বাঁশ দিয়ে বেড়া স্থাপন করেছেন যাতে মানুষজন চলাচল করতে না পারে। ব্রীজের দুইপাশে সকলের জমি থাকায় প্রতিনিয়ত পারাপাড় হতে হচ্ছে বিকল্প উপায়ে।
ঐ এলাকার বাসিন্দা মোঃ আব্দুল খালেক বলেন, মানুষের চলাচলের জন্য ব্রীজ নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু রাস্তা নির্মাণ করা হয়নি। ফলে ব্রীজ থাকলেও রাস্তা না থাকায় চলাচল করতে পারছে না এলাকাবাসী।
মোঃ সোলায়মান আলী সবুজ বলেন, বড়ুয়া ও ছড়ারপাড়ের মানুষের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপনের জন্য ব্রীজটি নির্মাণ করা হয়। কিন্তু রাস্তা নির্মাণ না করেই ব্রীজ করা হয়েছে। এ জন্য মানুষের কাজে আসছে না। মানুষের চলাচলে সমস্যা হচ্ছে। দ্রুত রাস্তা নির্মাণের দাবি জানাই।